সম্পূর্ণ সরস্বতী পূজা পদ্ধতি । Saraswati Puja Paddhati In Bengali PDF

সম্পূর্ণ সরস্বতী পূজা পদ্ধতি | Saraswati Puja Paddhati In Bengali PDF – আপনার সুবিধার্থে সরস্বতী পূজা পদ্ধতি মন্ত্র সহ দেওয়া হলো .

Saraswati Puja Paddhati In Bengali PDF

সম্পূর্ণ সরস্বতী পূজা পদ্ধতি । Saraswati Puja Paddhati In Bengali

ফর্দমালা – সিদ্ধি, সিন্দুর, তিল, হরিতকী, পঞ্চগুঁড়ি, পঞ্চশস্য, পঞ্চরত্ন, পঞ্চগব্য, পঞ্চপল্লব, যব-তিসিগাছ, পুরোহিত বরণ-১, ঘট-১. দ্বার ঘট-২, কুওহাঁড়ি-১, তেকাঠা-১, দর্পণ-১, তীরকাঠি-৪, সাদাসূতা, বরণডালা, সশীষ ভাব-৩, ঘটাচ্ছাদন গামছা, এক সরা আতপ চাউল, আসনাঙ্গুরীয়-২, মধুপর্ক বাটি-২, মধু, দধি, আবীর-অভ্র, দেবীর শাড়ী, ধূপ-প্রদীপ, বরণডালা-১, লক্ষ্মীর শাড়ী, চাঁদমালা, বিল্বপত্র-মালা, শাঁখা-লোহা, রচনা, আম্রমুকুল, কুল, লেখনি-মস্যাধার, নৈবেদ্য-২, কুচা নৈবেদ্য, থালা, ঘটি, ভোগের দ্রব্যাদি, পুষ্পাদি, পান, পানের মশলা, বালি, কাষ্ঠ, খোড়কে, গব্যবৃত, হোমের বিল্বপত্র-২৮, পূর্ণপাত্র ও দক্ষিণা।

নিষেধ – ব্রতীগণ পঞ্চমী পূজার পূর্বে কুল ভক্ষণ করিবেন না।

সরস্বতী পূজার নিয়ম – মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমীতে লক্ষ্মী-সরস্বতী, মৃস্যাধার ও লেখনী পূজা করিয়া প্রসাদ গ্রহণ করিবেন। পঞ্চমীর পূর্বদিনে হবিষ্যান্ন ভোজন করিয়া পঞ্চমীর দিনে স্নানাদি সমাপন পূর্বক শুদ্ধবস্ত্রে দেবী পূজার ব্রত করিবেন। পূজা অন্তে দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলী প্রদান, পূর্বক প্রসাদ ও নির্মাল্য গ্রহণ করিয়া নিরামিষ আহার করিবেন।

সরস্বতী পূজা পদ্ধতি – স্নানাদি সমাপন পূর্বক যথারীতি পূর্ব বা উত্তরাল্যে বসিয়া আচমন, বিষ্ণুস্মরণ পূর্বক কুশীতে আতৃপ চাউল লইয়া স্বস্তিবাচন করিবেন। স্থা-ও কর্তব্যেহস্মিন্ গণপত্যাদি নানা দেবতা পূজা পূর্বকং লেখনি মস্যাধার সহিত শ্রীশ্রীসরস্বতী পূজা কর্মাণি, ও পুণ্যাহং ভবতোহধি ব্রুবন্তু, ও পুণ্যাং ভবন্তোহধি ব্রান্ত, ওঁ, পুগান্তোহধি ব্রুবন্তু। ও পুণ্যাহং ও পূণ্যাহং, ও পুণ্যাহম্।।’ পুনরায় কর্তব্যেহস্মিন ইত্যাদি…… স্বস্তি

ভবন্তোহধি ব্রুবন্তু, (তিনবার), ওঁ স্বস্তি (তিনবার) পুনরায় কর্তব্যেহস্মিন…. ইত্যাদি, ঋদ্ধিং ভবন্তোহধি ব্রুবন্তু (তিনবার)। ও ঋদ্ধ্যতাম্ (তিনবার) তারপর কুশীর আতপ চাউল ছড়াইতে ছড়াইতে, ঘণ্টাধ্বনি সহকারে স্ববেদোক্ত স্বস্তিসূক্ত পাঠ করিবেন।

সঙ্কল্প – বিষ্ণুরোম্ তৎসৎ অদ্য মাঘ মাসি শুক্লেপক্ষে পঞ্চম্যাস্তিথৌ অমুক গোত্রঃ শ্রীঅমুক দেবশর্মা (পুরোহিতের নাম) অমুক গোত্রস্য শ্রীঅমুক দেবশর্মা বা দাসঃ সরস্বতী প্রীতিকামঃ গণপত্যাদি নানা দেবতা পূজাপূর্বকং লেখনি মস্যাধার সহিত লক্ষ্মী সরস্বতী পূজা কর্মাহং করিয্যে (পরার্থে করিষ্যামি) সঙ্কল্প শেষে স্ব স্ববেদোক্ত সঙ্কল্প পাঠ করিবেন।

অতঃপর, জলশুদ্ধি, আসনশুদ্ধি, পুষ্পশুদ্ধি প্রভৃতি সমাপ্ত করিয়া যথাবিধি নিয়মে ঘটস্থাপন করিবেন।

ঘটস্থাপন – ঘটে সিন্দুর দিয়া জলপূর্ণ করে পঞ্চগুঁড়ি নির্মিত মন্ডলে
মাটি, তদুপরি পঞ্চশস্য দিয়া ঘট বসাবেন। ঘটের মুখে আম্র মুকুলসহ আম্র পল্লব দিবেন।
তারপর একসরা চাল এবং সশীষ ডাব দিয়ে, গামছা দ্বারা আচ্ছাদন দেবেন। চারপাশে চারটি তীরকাঠি বসিয়ে সাদা সুতা দ্বারা বেষ্টন করবেন। ঘটের সম্মুখে কুণ্ডহাঁড়ি বসিয়ে তাতে দর্পণ দিবেন। দেবীর বাম হস্তে দূর্বাযুক্ত হলুদ সূতা বাঁধবেন, ঘটেও বাঁধবেন।
বামহাতে চাঁদমালা দেবেন।
এরপর স্ব স্ব বেদোক্ত মন্ত্র পাঠ করে ঘটস্থাপন করবেন।

জলশুদ্ধি – কোশার নিচে নিম্নমুখ ত্রিকোণ মণ্ডল জলদ্বারা অঙ্কিত করিয়া পূজা করিবেন। যথা-‘এতে গন্ধপুষ্পে ও আধারশক্তয়ে নমঃ, এইক্রমে-ও অনন্তায় নমঃ, ওঁ কুর্মায় নমঃ।’ এবার কোশা মণ্ডলে বসাইয়া অঙ্কুশ মুদ্রা দ্বারা তীর্থাবাহন করিবেন। যথা- “ও গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরী সরস্বতী। নর্মদে সিন্ধু কাবেরী জলেহস্মিন সন্নিধিং কুরু।”

তারপর তদুপরি ধেনুমুদ্রা ও মৎস্যমুদ্রায় আচ্ছাদন করলঃ, তদুপরি “ঐং” মন্ত্র দশবার জপ করিয়া সেই জল দ্বারা নিজেকে ও পূজা দ্রব্য সমূহকে প্রোক্ষণ করিবেন। এবার আসনশুদ্ধি করিবেন।

আসনশুদ্ধি – আসনের নীচে নিম্নমুখ ত্রিকোণ মণ্ডল করিয়া উহাতে

“এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ হ্রীং আধারশক্তয়ে কমলাসনায় নমঃ। -মন্ত্রে পূজা পূর্বক আসন ধরিয়া পাঠ করিবেন। যথা-ওঁ অস্য আসনোপবেশন মন্ত্রস্য মেরুপৃষ্ঠ ঋষিঃ সুতলং ছন্দঃ কৃর্মো দেবতা আসনোপবেশনে বিনিয়োগঃ। ওঁ পৃথ্বি ত্বয়া ধৃতা লোকা দেবি ত্বং বিষ্ণুনা ধৃতা। ত্বঞ্চ ধারয় মাং নিত্যং পবিত্রং করুচাসনম্। তারপর গুরুপংক্তি প্রণাম করিবেন। যথা-বামে গুরুভ্যো নমঃ। ওঁ পরম গুরুভ্যো নমঃ, ওঁ পরাপর গুরুভ্যো নমঃ, ওঁ পরমেষ্ঠী গুরুভ্যো নমঃ, ওঁ পরাৎপর গুরুভ্যো নমঃ। দক্ষিণে গণেশয় নমঃ, ঊর্দ্ধে ব্রহ্মণে নমঃ, অধঃ অনন্তায় নমঃ, মধ্যে-ওঁ ঐং সরস্বত্যৈ নমঃ।

পুষ্পশুদ্ধি – পুষ্প স্পর্শ করিয়া – “ওঁ পুষ্পে পুষ্পে মহাপুষ্পে সুপুষ্পে পুষ্প সম্ভবে। পুষ্পাচয়াবকীর্ণে হুং ফট্ স্বাহা”।

করশুদ্ধি – একটি সচন্দন পুষ্প লইয়া “ফট্” মন্ত্রে করতলে পেষণ পূর্বক ঈশান কোণে নিক্ষেপ করিবেন।

অতঃপর, গণেশ, সূর্য্য, বিষ্ণু, শিব ও জয়দুর্গা, এই পঞ্চ দেবতার পূজা পঞ্চোপচারে করিয়া দেবীর পূজা করিবেন। প্রথমে কুর্মমূদ্রায় পুষ্প লইয়া দেবীর ধ্যানান্তে পুষ্পটি নিজ মস্তকে দিয়া মানসোপচারে পূজা পূর্বক আবাহন্যাদি পঞ্চমূদ্রা দ্বারা দেবীর আবাহন পূর্বক, পুনরায় ধ্যানান্তে পুষ্পটি ঘটে দিয়া যথাশক্তি উপচারে দেবীর পূজা করিবেন।

দেবীর ধ্যান – ওঁ তরুণসকলমিন্দোবিভ্রতিং শুভ্র কান্তিং।
কুচভরণমিতাঙ্গী সন্নিষণ্ণা সিতাজে।
নিজকরকমলোদ্যল্লেখনী পুস্তক শ্রীঃ।
সকল বিভবসিদ্ধ্যৈ পাতু বাগদেবতা নঃ।।

ধ্যানান্তে পুষ্পটি ঘটে দিয়া উপচার সকল নিবেদন করিবেন। প্রত্যেকটি দ্রব্য অর্চনা পূর্বক-‘ওঁ সরস্বত্যৈ নমঃ মন্ত্রে’ নিবেদন করিবেন। অতঃপর ধ্যানান্তে নারায়ণ ও লক্ষ্মীর পূজা করিবেন।

নারায়ণের ‘ধ্যান – ওঁ শান্তাকারং ভূজগশয়নং পদ্মনাভৌ সুরেশং।

বিশ্বাধারং গগন সদৃশং মেঘবর্ণং শুভাঙ্গম্।। লক্ষ্মীকান্তং কমল নয়ং য়োগিভ্যিান গম্যং। বন্দে বিষ্ণুর্ভবভয় হরং সর্বলোকৈক নাথং।।

পূজামন্ত্র – ওঁ নমো নারায়ণায় নমঃ।

লক্ষ্মীর ধ্যান – ওঁ পাশাক্ষমালিকাম্ভোজ সৃণিভির্যাম্য সৌম্যয়ো। পদ্মাসনস্থাং ধ্যায়েচ্চ শ্রিয়ং ত্রৈলোক্য মাতরম্ ।। গৌরবর্ণাং সুরূপাঞ্চ সর্বালঙ্কার ভূষিতাম্। রৌক্সপদ ব্যগ্রকরাং বরদাং দক্ষিণেন তু।।

পূজামন্ত্র – ওঁ শ্রীং লক্ষ্মীদেব্যৈ নমঃ।।

অতঃপর গন্ধগুষ্প দ্বারা পূজা করিবেন। যথা-‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ লেখনী-মস্যাধারেভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে-বীণা যন্ত্রায় নমঃ, এতে গন্ধপুষ্পে ও আবরণ দেবতাভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে চতুর্বেদেভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে পুস্তকাদিভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে হংসায় নমঃ।’ ইত্যাদি ক্রমে পূজা পূর্বক সাধারণ কুশণ্ডিকা নিয়মে স্থণ্ডিল নির্মাণ পূর্বক হোম করিবেন।

যথারীতি অগ্নিস্থাপন পূর্বক-বিল্বপত্রের অর্চনা করিয়া-“ওঁ ঐং সরস্বত্যৈ স্বাহা” মন্ত্রে হোম করিবেন। যজ্ঞডুম্বুর সমিধ শেষে “ওঁ তদ্বিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্ স্বাহা” মন্ত্রে বিষ্ণুর হোম করিয়া, লেখনীমস্যাধারেভ্যো স্বাহা।

এইরূপে-নবগ্রহ, ইন্দ্রাদি দিকপাল প্রভৃতির হোম করিয়া মৃড় নামক অগ্নির ধ্যান, আবাহনপূর্বক পূজ। করিয়া বস্ত্রখণ্ড, পান ও কদলী অগ্নিতে দিয়া পূর্ণাহুতি করিবেন। তারপর অগ্নির ঈশান কোণে দুগ্ধ যা দধি দিয়া পূর্ণপাত্র উৎসর্গ পূর্বক অগ্নির বিসর্জন পূর্বক কশ্যপ (তিলক) গ্রহণ করিবেন। পরে পুষ্পাঞ্জলি দিবেন।

পুষ্পাঞ্জলী মন্ত্র – (১)
যা কুন্দেন্দু তুষারহার ধবলা যা শ্বেত পদ্মাসনা।
যা বীণা বরদণ্ড মণ্ডিত ভুজা যা শুভ্রাবস্ত্রাবৃতা ।।
যা ব্রহ্মাচ্যুতশঙ্কর প্রভৃতিভির্দৈবৈ সদা বন্দিতা।
সা মাং পাতু ভগবতী সরস্বতী নিঃশেষ জাড্যাপহা ৷৷

সা মে বসতু জিহ্বায়াং বীণাপুস্তক ধারিণী।
মুরারী বল্লভাং দেবীং সর্বশুক্লা সরস্বতী।
সরস্বতী মহাভাবে বিদে, কমল লোচান।
বিদ্যারূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাং দেহি নমোহস্তুতে।

(২) জয় জয় দেবি। চরাচর সারে।
কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে ।।
বীণা পুস্তক রঞ্জিত হস্তে।
ভগবতী ভারতী দেবী নমস্তে।

Saraswati Puja Paddhati In Bengali PDF [Download ]

উপসংহার – আশা করি আপনি আজকের পোস্ট ( Saraswati Puja 2025 Date ) থেকে উপকৃত হয়েছেন । সরস্বতী দেবীর আরাধনা করলে দেবী সরস্বতীর কৃপায় জ্ঞান লাভ হয় এবং জ্ঞানের আলোয় মানুষের জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। আপনি এই নিবন্ধ থেকে উপকৃত হলে, একটি মন্তব্য রেখে আমাদের উত্সাহিত করুন.

এরকমই আরো তথ্য পেতে ক্লিক করুন এখানে

আরো পড়ুন

Sharing Is Caring:

Leave a Comment